চিরিরবন্দরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন মন্দিরে বাসন্তী পূজা উদযাপন হচ্ছে
মোঃ জসিম উদ্দিন;স্টাফ রিপোর্টার,
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় কোভিড-১৯ মহামারী প্রাণঘাতী ভাইরাসের মধ্যেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক ব্যবহার করে অল্প পরিসরে বাসন্তী পূজা উদযাপিত হচ্ছে।
এসময় অত্র উপজেলার বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, উপজেলা শাখার সদস্য সচিব শ্রী নারায়ণ চন্দ্র রায় বাসন্তী পূজায় আরজি গলাহার শ্রী শ্রী বাসন্তী দেবী মন্দিরে বিশ্ব শান্তীকল্পে কোভিড-১৯ মহামারী প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে মানবজাতির রক্ষা পাওয়ার জন্য বাসন্তী মন্দিরে আরাধনা করেন।
এসময় অত্র মন্দিরের সভাপতি শ্রী নারায়ণ চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চিরিরবন্দর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব বলেন আমাদের উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাসন্তী পূজা উদযাপিত হচ্ছে ।
আরো বলেন সে একটা জাতির পুজোর ইতিহাসটাকেই হুবহু বদলে দিল! না হলে বাঙালির দুর্গাপুজোর দিনক্ষণ এভাবে আমূল বদলে যায়!
ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই প্রকৃত দুর্গাপুজো । যদিও একালে আশ্বিন শুক্লপক্ষের দুর্গাপুজোই অন্যতম প্রধান পুজোর স্বীকৃতি পেয়ে গিয়েছে।
অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য সব কালেই মানুষ আদ্যাশক্তির আরাধনা করে।
পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজ্য-হারানো রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে মূর্তি গড়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। এবং সেটাই চলতে থাকে। কিন্তু রামচন্দ্র। সীতা-উদ্ধার কালে অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য শরৎকালেই দুর্গার আরাধনা করলেন। এটি অকালবোধন হিসাবে বিখ্যাত হল। আর তার পর থেকে এই পুজোই চলতে থাকল।
বাল্মীকি অকালবোধনের ঘটনাটি তাঁর রচনায় উল্লেখ করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু বাঙালি কবি কৃত্তিবাস ওঝা তাঁর বঙ্গ-রামায়ণে এই অংশের এমন আবেগমথিত বর্ণনা দেন যে, তা বরাবরের জন্য বাঙালিচিত্তে গেঁথে যায়। শরৎকালের দুর্গাপুজো এইভাবেই ধীরে ধীরে তার নিজস্ব ধর্মীয়-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞান রচনা করে গণমনে চিরস্থায়ী হয়ে ওঠে।
কিন্তু তবুও বাঙালি তার আদি দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। সে এখনও দুর্গাপুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করে। যদিও এই পুজো কোনও দিনই বারোয়ারির আকার নেয়নি। যে সময়ে রমরম করে বাসন্তী পুজো হত তখনও তা আয়োজিত হত মূলত জমিদার নায়েব গোমস্তা গোষ্ঠীর লোকজনদের দ্বারাই। এই পুজো কোনও দিনই সাধারণের পুজো হয়ে ওঠেনি। এখনও এই পুজো পরিবার-তন্ত্রেই আটকে, বারোয়ারি হয়নি। বড়লোকের বাড়ির হঠাৎ-শুরু-হওয়া বাসন্তী পুজো এই পুজোর সঙ্গে ধন-তন্ত্রের যোগ প্রবলই।কেন এক সময় রমরম করে বাসন্তী পুজো হত, তার একটা অন্য কারণও কেউ কেউ বলে থাকে। বসন্ত ঋতুর শেষে গ্রীষ্মের শুরুর এই সময়টায় সেকালে বসন্ত রোগের (pox) খুব প্রকোপ ছিল। টিকাহীন চিকিৎসাহীন সেই অতীতে দুর্বার বসন্তের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য মায়ের আরাধনা করে মায়ের কৃপা প্রার্থনা করা হত।অত্র মন্দিরের বিভিন্ন সনাতন ধর্মাবলম্বী সনাতনী বাবা, মা ভাই ও বোনদের প্রার্থনা করা দেখা যায়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।